আপনার ত্বকের ধরনের ওপর নির্ভর করে কীভাবে বেছে নেবেন সঠিক ত্বক পরিচর্যার উপাদান

Written by Manisha DasguptaJul 27, 2022
আপনার ত্বকের ধরনের ওপর নির্ভর করে কীভাবে বেছে নেবেন সঠিক ত্বক পরিচর্যার উপাদান

বন্ধুর পরামর্শমতো কোনও একটা প্রডাক্ট ব্যবহার করেছেন, অথচ মনোমতো ফল পাননি? তার কারণ আমাদের প্রত্যেকের ত্বক আলাদা এবং ব্যক্তিভেদে ত্বক পরিচর্যার বিষয়টিও পালটে যায়। যা মেখে আপনার বন্ধুর ত্বক জেল্লাদার হয়ে ওঠে, সেটা মাখলে আপনার ত্বকে হয়তো অজস্র ব্রণ বেরিয়ে যাবে! তাই স্বাভাবিকভাবেই যে প্রশ্নটা আসে - আপনার ত্বকের জন্য কোন স্কিনকেয়ার প্রডাক্টটি উপযুক্ত? সেই প্রশ্নেরই উত্তর দেব আমরা। রইল এমন কিছু উপাদানের কথা যা আপনার ত্বকের ধরনের ওপর ভিত্তি করে ত্বক পরিচর্যায় ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি তাতেও বিভ্রান্ত লাগে, তার জন্য কিছু প্রডাক্ট সংক্রান্ত পরামর্শও দিয়ে দিলাম আমরা।

 

 

তেলতেলে ত্বক

মিশ্র ত্বক

আমাদের প্রত্যেকেরই রোমছিদ্রের নিচে সেবেশাস গ্রন্থি রয়েছে যা সেবাম নামে প্রাকৃতিক তেল উৎপাদন করে। এই প্রাকৃতিক তেলের কাজ হল ত্বককে আর্দ্র আর সুস্থ রাখা। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সেবাম উৎপাদন হয়। বয়স, জিন, পরিবেশ, আবহাওয়া, ভুল স্কিনকেয়ার প্রডাক্টের ব্যবহারের মতো নানা কারণে সেবামের উৎপাদন বেশি হয়।

ত্বকে এই বাড়তি তেলের চকচকেভাব কমাতে চাইলে ত্বক পরিচর্যার রুটিনে কিছু নির্দিষ্ট প্রডাক্ট যোগ করতে পারেন। ক্লে যুক্ত প্রডাক্ট তেলতেলে ত্বকে খুব ভালো কাজ করে। বেন্টোনাইট, কেওলিন, ফ্রেঞ্চ ক্লে তেলতেলে ত্বকের জন্য খুব উপকারী। ক্লে তেলতেলেভাব শুষে নিয়ে ত্বক তরতাজা আর ম্যাট রাখে। ল্যাকমে নাইন টু ফাইভ ভিটামিন সি ক্লে মাস্ক/ Lakmé 9to5 Vitamin C Clay Mask সেরা ত্বক পরিচর্যার উপাদান দিয়ে তৈরি যা আপনাকে স্বপ্নের ত্বক দিতে পারে। এই মাস্কের মূল ক্লে ফর্মুলায় রয়েছে কেওলিন আর বেন্টোনাইটের (দারুণ জুটি) মিশ্রণ আর তার সঙ্গে ভিটামিন সি যা আপনার ত্বক উজ্জ্বল করে!

নিয়াসিনামাইড উপাদানটিও আপনার অবিলম্বে দরকার। নিয়াসিনামাইড বাড়তি তেল শুষে নেয়। বাড়তি তেল দূরে রাখতে নিয়াসিনামাইড সিরাম, যেমন সিম্পল বুস্টার সিরাম - 10% নিয়াসিনামাইড/ Simple Booster Serum - 10% Niacinamide  ব্যবহার করুন। মুখে বাড়তি তেল কমানো ছাড়াও এই উপাদানটি কোমলভাবে ত্বক এক্সফোলিয়েট করে, ত্বকের টেক্সচারও উন্নত করে তোলে।

 

শুষ্ক ত্বক

মিশ্র ত্বক

তেলতেলে ত্বকের বিপরীতে রয়েছে শুষ্ক ত্বক। এই ত্বকে সেবাম উৎপাদন খুব কম হয়। নানা কারণে তা হতে পারে। ত্বক থেকে প্রাকৃতিক তেলের আস্তরণ শুষে নেয় এমন প্রডাক্ট ব্যবহার করলেও ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। অন্যান্য ত্বকের তুলনায় শুষ্ক ত্বকে অসময়ে বলিরেখা আর সূক্ষ্ম রেখা দেখা দিতে পারে।

শুষ্ক ত্বকের জন্য আপনার চাই অত্যন্ত ময়শ্চারাইজিং ও ঘন প্রডাক্ট। গ্লিসারিনযুক্ত ময়শ্চারাইজার শুষ্ক ত্বকে ভালো কাজ করে। পুষ্টিগুণ ও ক্ষতি সারানোর ক্ষমতার কারণে গ্লিসারিন বহুবছর, বহু প্রজন্ম ধরে ব্যবহার হচ্ছে।

শুষ্ক ত্বকের জন্য আরও একটি দারুণ উপাদান হল ভিটামিন ই। এটি ত্বক থেকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালসের প্রকোপ কমায় এবং সেবাম উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। ত্বকে লাগালে এই উপাদানটি ত্বক আর্দ্র আর নরম রাখে। সবচেয়ে বড় কথা, ভিটামিন ই বয়সের দাগ কমাতে আর ত্বকের টেক্সচার উন্নত করতে সাহায্য করে।

আপনার ত্বক যদি শুষ্ক প্রকৃতির হয়, তা হলে পন্ড'স লাইট ময়শ্চারাইজার নন-অয়েলি ফ্রেশ ফিল উইথ ভিটামিন ই+গ্লিসারিন/ Pond’s Light Moisturiser Non-Oily Fresh Feel With Vitamin E + Glycerine মাখুন। এই দুটি উপাদানই শুষ্ক ত্বকের পক্ষে উপযোগী। দিন ও রাত, দু'বেলাই এই ময়শ্চারাইজারটি ব্যবহার করা যায়। এটি ত্বক তেলতেলে করে না, অথচ আর্দ্রতার জোগান বাড়িয়ে ত্বক সুস্থ রাখে।

 

 

ডিহাইড্রেটেড ত্বক

মিশ্র ত্বক

এই ত্বককে অনেক সময় শুষ্ক ত্বকের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়। প্রকৃতপক্ষে শুষ্ক ত্বক ও ডিহাইড্রেটেড ত্বকের মধ্যে তফাত আছে। শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা আর প্রাকৃতিক তেলের অভাব থাকে, আর ডিহাইড্রেটেড ত্বকের কোষে আর্দ্রতা আর জলের অভাব থাকে। কম জল খেলে, শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আর ভুল ত্বক পরিচর্যার কারণে এমন হতে পারে।

ডিহাইড্রেটেড ত্বকের পরিচর্যার রুটিনে ভালো হিউমেকট্যান্ট দরকার, অর্থাৎ এমন উপাদান যা জল ধরে রাখতে পারে। হিউমেকট্যান্ট হল এমন উপাদান যাতে ত্বকের কোষে জল ধরে রাখার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা আছে। এতে সুস্থ কোষের জন্ম হয় এবং ত্বক আর্দ্র থাকে।

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো আর উপযুক্ত সমাধান হল হ্যালুরনিক অ্যাসিড। ইন্টারনেট ঘাঁটলেই বুঝবেন, সকলেই এই উপাদানটিকে অবশ্য প্রয়োজনীয় বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। হ্যালুরনিক অ্যাসিড হল সবচেয়ে শক্তিশালী হিউমেকট্যান্ট। আমাদের পরামর্শ, সিম্পল বুস্টার সিরাম-3% হ্যালুরনিক অ্যাসিড+বি ফাইভ/ Simple Booster Serum - 3% Hyaluronic Acid + B5 ব্যবহার করুন। এতে 0.5% সক্রিয় হ্যালুরনিক অ্যাসিড রয়েছে এবং 2.5% প্রোঅ্যাকটিভ ভিটামিন বি ফাইভ আছে যা 72 ঘণ্টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ আর্দ্রতা জোগায়। শুধু ঠিকভাবে প্রডাক্টটি ব্যবহার করতে হবে।

ডিহাইড্রেটেড ত্বকের জন্য আমাদের দ্বিতীয় পছন্দের উপাদানটি হল অ্যালো ভেরা জেল। হ্যালুরনিক অ্যাসিডের মতোই অ্যালো ভেরা জেলও ত্বকের কোষে জল ধরে রাখতে সাহায্য করে। তা ছাড়া অ্যালো ভেরা জ্বালা আর প্রদাহযুক্ত ত্বক শীতল করতেও সাহায্য করে। ল্যাকমে নাইন টু ফাইভ ন্যাচারাল অ্যালো অ্যাকোয়া জেল/Lakmé 9 to 5 Naturale Aloe Aqua Gel-এ 100% খাঁটি অ্যালো ভেরা রয়েছে এবং এটি একেবারেই চটচটে নয়!

 

মিশ্র ত্বক

মিশ্র ত্বক

মিশ্র বা কম্বিনেশন ত্বক হল তেলতেলে আর শুষ্ক ত্বকের সংমিশ্রণ। কম্বিনেশন ত্বক হলে আপনি দেখবেন মুখের কিছু অংশ কিছুক্ষণের মধ্যেই তেলতেলে হয়ে পড়ছে, অথচ বাকি অংশ স্বাভাবিক থাকছে। অথবা কোনও অংশে খুব শুকনো টান ধরছে, বাকি অংশ স্বাভাবিক রয়েছে।

এ ধরনের ত্বকের আদর্শ উপাদান হল রেটিনল। রেটিনল কোষের গভীরে গিয়ে ভারসাম্যের অভাব ঠিক করতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকের টেক্সচারে সমতা আসে। ডার্মালজিকা রেটিনল ক্লিয়ারিং অয়েল ফর অ্যাকনে-প্রোন স্কিন/Dermalogica Retinol Clearing Oil For Acne-prone Skin ব্যবহার করে দেখুন। এটি কম্বিনেশন ত্বকে ভালো কাজ করে, এবং ব্রণপ্রবণ ত্বকের ক্ষেত্রেও এটি দারুণ উপকারী। এই প্রডাক্টটি ত্বকের টেক্সচার উন্নত করে আপনাকে এনে দেয় উজ্জ্বল তরুণ ত্বক।

Manisha Dasgupta

Written by

Author at BeBeautiful.
1595 views

Shop This Story

Looking for something else